Skip to main content

বিশ্ববিদ্যালয় অন্তে কৃতজ্ঞতা যাঁদের প্রতি

Image may contain: 6 people, including Yousuf Naeem, Shahin Alam Says, Abul Basar and Tabibur Rahman, people smiling, people standing, sky, child, ocean, shoes, outdoor and nature
“ছেলেটা পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে”
সামান্য কারণে কুমিল্লা জিলা স্কুলের গণিত শিক্ষক গোলাম মোস্তফা স্যার ষষ্ঠ শ্রেণিতে ক্লাসে সকলের সামনে এমন ‘স্বীকৃতি’ দিয়ে পুরো স্কুল জীবনের পাঁচ বছরে ছেলেটির কখনও পড়া দেন নি, পড়া নেন নি। গ্রাম থেকে আসা নতুন শহর, নতুন পরিবেশে আসা কিশোরের জন্য এ ছিল এক চরম আঘাত, আত্মবিশ্বাস গঠনে যা হয়ে উঠল কাঁটার মত।
সেই কিশোর আমি থেমে থাকি নি। স্কুল ও কলেজে কৃতিত্বপূর্ণ ফলাফলের পরে স্বপ্নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আমার আগমন ঘটেছিল। অবশেষে সেই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গত পরশু মাস্টার্সে ৩.৬৫ সিজিপিএ নিয়ে ফলাফল প্রকাশের সাথে সাথে পরিবারের দ্বিতীয় সদস্য হিসেবে স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করলাম।
এই শুভদিনে আমি আমার আব্বা, মা, আপা, দুলাভাই আব্দুল মোতালেব (Robert Fred Douglas) ও ছোটভাই Nazmul Hasan এর প্রতি অসীম কৃতজ্ঞতা প্রতি প্রকাশ করছি আমার সমস্ত কিছুতে নিঃশর্ত সমর্থন দিয়ে যাওয়ার জন্য। তবে এই পর্যন্ত আমার পথ চলার সবচেয়ে অনুপ্রেরণা আমার ভাইয়া Abdullah Al Mamun, যার আর্থিক ও মানসিক সহযোগিতা এবং পরামর্শ আমাকে প্রতিনিয়ত উদ্বুদ্ধ করেছে অধিক ভাল কিছু করতে। কীভাবে বললে আমার এই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ পাবে, তা আমার জানা নেই।
প্রিয় প্রাঙ্গন সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিঊটের সকল শিক্ষকের প্রতি অকুণ্ঠ শ্রদ্ধা জানাই। প্রফেসর Asm Atiqur Rahman স্যার, প্রফেসর Hafiz Uddin স্যার ও শ্রদ্ধেয় Tawohidul Haque স্যার আপনাদের স্নেহ ও উৎসাহ সারা জীবনের পাথেয় হয়ে থাকুক। বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে অসংখ্য সিনিয়র ভাই-বোন, ইয়ারমেট ও জুনিয়র ভাই-বোনের সাথে পরিচিত হওয়ার সুযোগ পেয়েছি। এর মধ্যে কবি জসীম উদ্দীন হল ডিবেটিং ক্লাব, সমাজকল্যাণ ডিবেটিং ক্লাব ও চোখ সাহিত্য সংসদের সাংগঠনিক কাজকর্ম ও ইঞ্চি ইঞ্চি স্মৃতি আমার বাকি সমস্ত জীবনে চির জাগরূক হয়ে থাকবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে জীবনে সবচেয়ে বেশি আমি শিখেছি কবি সুজন শান্তনু ভাইয়ের কাছ থেকে। যার প্রতিটি কথা, বক্রোক্তি, হাসি আমার কাছে এক একটি অচেনা জগত সন্ধানের সংকেত। বলতে গেলে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনিই আমার সেরা শিক্ষক। সুসময়ে ও দুঃসময়ে অগোছালো এই আমাকে বাস্তব বুদ্ধি-পরামর্শ দিয়েছেন Rafiqul Islam ভাই (এখনও দিয়ে যাচ্ছেন😜)। ভাল মন্দ সব সময়ে যার পরামর্শ আমি পালন করি, তিনি আমার প্রিয় Rashedul Islam ভাই। রাজু ভাইয়ের (Al Mukaddis) হাস্যরসের মাঝখানেও অনেক কিছু শিখছি। আমি এঁদের সকলের প্রতি আমার অকৃত্রিম কৃতজ্ঞতা জানাই। 🙂🙂
বন্ধু হিসেবে সব সময় কাছে পেয়েছি Kazi Alauddin Al Azad কে। পড়াশোনায় আমাকে সবচেয়ে সাহায্য করেছে পড়ুয়া বন্ধু Shafiullah। ভুল-চুক ধরে আমাকে অনেক শোধরানোর চেষ্টা করেছে বিচক্ষণ Maruf Mahom। Aslam SunnyAbu Bakkar Siddik রাজ, Tabibur Rahman, সালমা আনজুম স্বর্ণা, Hossain Mahmud ApelShamima NasreenAdil AhmedNasir HossainAadil ShaakirJobayer RahmanMazidul Alam Nasim এরকম অসাধারণ মানুষগুলোকে বন্ধু হিসেবে পাওয়া ভীষণ সৌভাগ্যের ব্যাপার। দেশের বাইরে থেকেও Shariful Islam ভাই ও আরিফের উৎসাহ ভীষণ কাজে লেগেছে। বন্ধু Saiful Islam কেমন যেন দূরে সরে গেছে। Nasir Uddin ভাই, অনেক দিন আপনার সাথে দেখা হয় না! এদের সকলের কথা ও কাজ আমাকে ইতিবাচকভাবে প্রভাবিত করেছে গত প্রায় ৬ বছর। আন্তরিকতা ও বিশ্বস্ততায় ভর করে সম্পর্কগুলো চলতে থাকুক অনন্তকাল। 😍
প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সমাপ্তি হল বটে, শিখনের কি শেষ হয়! এই দীর্ঘযাত্রায় যাঁদের কাছে আমার কথা কিংবা কাজ কোন কালে অপরিণত কিংবা অপ্রত্যাশিত ঠেকেছে, তাঁরা নিজগুণে এই নাদান বান্দাকে ক্ষমা করবেন, আশা রাখি।
বেকার জীবন দীর্ঘায়িত না করার প্রতিশ্রুতি জানাচ্ছি। 😀
সকলের শুভ কামনা আবশ্যক 🤓

Comments

Popular posts from this blog

হুমায়ূন আহমেদের সবচেয়ে জনপ্রিয় ১০ গান

হুমায়ূন আহমেদ। ১৩ নভেম্বর ,  ১৯৪৮  –  ১৯ জুলাই ,  ২০১২ গদ্যকার, নাট্যকার , চলচ্চিত্রকার ইত্যাদি নানাবিধ পরিচয়ের বহুল প্রচার তাঁর গীতিকার পরিচয়কে ধামাচাপা দিয়ে রাখছে। হুমায়ূন আহমেদ সত্যিকার অর্থে সর্বদিকেই এক যাদুকরের নাম।  ১৩ নভেম্বর তাঁর জন্মদিন উপলক্ষ্যে আমরা জেনে  নেব  তাঁর লেখা সবচেয়ে জনপ্রিয় ১০  গানের লিরিক্স। সাথে থাকছে ইউটিউব লিংক!   ১। যদি মন কাঁদে,  তুমি চলে এসো  এক বরষায় এসো ঝর ঝর বৃষ্টিতে, জল ভরা দৃষ্টিতে যদি কোমল শ্যামল ছায়।। যদিও তখন আকাশ থাকবে বৈরী, কদম গুচ্ছ হাতে নিয়ে আমি তৈরী উতলা আকাশ মেঘে মেঘে হবে কালো ঝলকে ঝলকে নাচিবে বিজলি আলো।।  নামিবে আঁধার বেলা ফুরাবার ক্ষণে মেঘমল্লার বৃষ্টির মনে মনে কদমগুচ্ছ খোঁপায় জড়ায়ে দিয়ে জলভরা মাঠে নাচিবো তোমায় নিয়ে।।  ভিডিও লিংক-  https://youtu.be/VBS1yyHTxek?list=PLS1Hg7Qpin0RgzvTf6xai0ZDZcxAtENB6 ২। চাঁদনী পসরে কে আমারে স্মরণ করে কে আইসা দাড়াইসে গো আমার দুয়ারে। তাহারে চিনি না আমি...

জহির রায়হানের জীবন ও কর্মে বাঙালি জাতীয়তাবাদ

   ‘গুরুমশাই, অন্ধকারে কে দেখাবে মানচিত্রখানা? মাথার মধ্যে দৃশ্য নানা, স্মৃতির মধ্যে অজস্র ফুল, তাঁর সুবাসেই দেশকে পাচ্ছি বুকের কাছে’ নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী / দেশ দেখাচ্ছে অন্ধকারে স্মৃতিকে স্মরণে রেখে বুকের মধ্যে দেশকে অনুভব করা ও ক্ষণে ক্ষণে কথায়-কর্মে  তার প্রকাশ ঘটাতে পারা মানুষের সংখ্যা খুব কম- হাতে গোনা। জহির রায়হান সে রকম একজন। শুধু বাংলা চলচ্চিত্র নয় সাহিত্য, সাংবাদিকতা ও রাজনীতিতে তিনি দেখেছেন দেয়ালে পিঠ থেকে যাওয়া বাঙালির কাঙ্ক্ষিত  মুক্তির স্বপ্ন।  বাঙালির ঐতিহ্য-চিন্তা-মনন-দুর্দশা-লিপ্সা নিপুণ তুলিতে যেমন এঁকেছেন উপন্যাস ও গল্পের খেরোখাতায়, তেমনি বন্দী করে রেখেছেন তার চলমান ছবি সেলুলয়েডের ফিতায়।  বাঙালির স্বাধীনতার জন্য তিনি দেশান্তর হয়েছিলেন, হন্যে হয়ে বিশাল ভারতের বিশাল জনসমুদ্রে হেঁটে বেড়িয়েছেন, আন্তর্জাতিক সমাবেশে জনমত গড়ে তুলেছেন এবং ঘরে অসুস্থ স্ত্রী ও পরিবারকে অভুক্ত রেখে উপার্জিত অর্থ বিলেয়ে দিয়েছেন ভারতে বাংলাদেশের শরণার্থীদের জন্য।  বাংলা চলচ্চিত্রের নান্দনিক স্থপতি হিসেবে বাংলা সংস্কৃতিকে যেমন তিনি দিয়েছেন স...

কামরুল কাইসের ১০ কবিতা

১. মহামারি  স্থির সময় অথির বেগে দ্যাখায় যেন অসময়ের ফল। ২. মিতালি ওসব কথা থাক- একটু নিবিড় চঞ্চু তোমার নদীর যেন বাঁক। দৃশ্যে মাখো কালি‌ - তীরে বসে দেখছি নদী দিচ্ছি শিস আর তালি। দন্তসমেত হাঙর ছোটে করাল স্রোতে তোর আমি ডাকি শান্ত দোয়েল  তাতেই নষ্ট ভোর! আজকে এসব রাখ- অল্প কথার কথকতা দূর মিলিয়ে যাক। ৩. প্রাপ্তি মেঘের কান্না দেখব বলে আকাশে তাকিয়েছিলাম নেই, নেই কান্না শুধু এ মনেই। ঊষরতা পাবো বলে মরুভূমি চেয়েছিলাম নেই, নেই ফুল ফোটা সবখানেই। কাকে ছোঁব বলে যেন হাত বাড়িয়ে ছিলাম নেই, নেই রয়ে গেছে সে চির ভাবনাতেই। ৪. স্বাধীনতার সনেট ভেসে ছিল দেশ যবে শোণিত ধারায়, আর্তের ক্রন্দনে ছিল স্পর্শ বেদনার। পাখির সুরেলা কণ্ঠ বন্ধ ছিল হায়! হৃদয়-রক্ত ক্ষরণে বাংলা নিঃসাড়, রবির কিরণ নেই ঊষা-নীলিমায়, আকাশে ভাসল ধোঁয়া বারুদ বোমার পান্থ শ্রান্তি সারল না অশ্বত্থ ছায়ায়- অপরাহ্ণে নেমে এল নিকষ আঁধার! মাঠের সবুজতায় রক্তিম পরশ স্বাধীন প্রাণ স্পন্দন এলো অবশেষে- কণ্ঠে জাগাল সংগীত সপ্তসুর এসে! চেতনার রন্ধ্রে পূর্ণ গভীর হরষ উচ্ছসি হল উদ্ভাস। আজো বহমান। স্বাধীন-তটিনী-ধারা, হবে না প্রয়াণ। ৫. অপহৃত আকাশ যদি না কখনো গোধূ...