Skip to main content

একটুখানি বিজ্ঞানের অনেকখানি আয়তন



ফিজিক্স অ্যান্ড রিয়্যালিটি বইয়ে আইনস্টাইন বলেছিলেন, বিজ্ঞান প্রতিদিনকার চিন্তার শুদ্ধিকরণ মাত্র। আর প্রচল তথ্য ও চিন্তার শুদ্ধতা নিরূপণ করা হয় যুক্তি, পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষার মাধ্যমে। একটুখানি বিজ্ঞান ড. মুহাম্মাদ জাফর ইকবাল রচিত পদার্থবিজ্ঞানের বিভিন্ন মৌলিক ও তত্ত্বীয় প্রবন্ধের সংকলন যা ইতোপূর্বে সাহিত্যের নামকরা কাগজ কালি ও কলমে প্রকাশিত হয়েছিল।

সুপরিচিত শিশুসাহিত্যিক, শিক্ষাবিদ ও বিজ্ঞানী  ড. মুহাম্মাদ জাফর ইকবাল এই বইয়ের বিষয়গুলো সম্পর্কে বলেন, ‘বিজ্ঞানের যে বিষয়গুলো সবচেয়ে রহস্যময়, আমার সেগুলোই সবচেয়ে ভালো লাগে।’ বিজ্ঞান, বিজ্ঞানচর্চা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির পার্থক্য, বিজ্ঞানে গবেষণা প্রক্রিয়া, তথ্যপ্রযুক্তি প্রভৃতি পরিচিত বিষয়ের উপর যেমন রয়েছে তথ্যপূর্ণ আলোচনা, তেমনি এই বইয়ে রয়েছে ফাইবার অপটিক্স, ডিএনএ ডিজাইন, কোয়ান্টাম মেকানিক্স, থিউরি অব রিলেটিভিটি, বিগ ব্যাং থিউরি, স্ট্রিং থিউরি, ব্ল্যাক হোল, টাইম মেশিন প্রভৃতি অপেক্ষাকৃত দুরূহ বিষয়ের সহজবোধ্য ব্যাখ্যা।

 আপাত সম্পর্কহীন এসব প্রবন্ধের যোগসূত্র হচ্ছে, লেখকের ব্যক্তিগত আগ্রহ ও পাঠকের চাহিদা। যেসব কারণে বইটি পাঠকের কাছে সমাদর লাভ করতে পারে-
১। স্টোরি টেলিং পদ্ধতির মাধ্যমে মূল তত্ত্বকে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।
২। আকর্ষণীয় বাক্য বিন্যাস ও বিষয় বৈচিত্র্য মনোযোগ ধরে রাখে শেষ পর্যন্ত।
৩। ক্যাপশনসহ অসংখ্য প্রাসঙ্গিক চিত্র  অনুধাবনকে সহজ করে তোলে।
৪। বিজ্ঞানের ছাত্র সহ সকলের কাছে বোধগম্য বই।

এই বই পাঠে আমি নতুন ও চমকপ্রদ যা জানলাম, তা শেয়ার করার লোভ সামলাতে পারছি না!
  • ·          মহাবিশ্বের ৭ ভাগ আমাদের দৃশ্য, বাকি ৯৩ ভাগ আমরা দেখতে পাই না আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্যের হ্রাস বৃদ্ধির কারণে।
  • ·         নির্দিষ্ট তরঙ্গদৈর্ঘ্য অপেক্ষা কোন নক্ষত্রের আলোর তরঙ্গদৈর্ঘ্য বেশি হলে বোঝা যাবে নক্ষত্রের বিস্তৃতি ঘটছে আর কম হলে বোঝা যাবে সংকুচিত হচ্ছে।
  • ·         চতুরতার সাথে দুর্নীতি করা হলে আইনের সাথে কোন ঝামেলা ছাড়াই বড় অংকের অর্থ উপার্জন সম্ভব।
  • ·          গণিতের সূত্রকে প্রমাণ করার জন্য ব্যবহার করা হয় Contradiction Method এবং Induction Method
  • ·         পশুপাখিদের অস্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া ভূমিকম্পের পূর্বাভাস দিতে পারে!
  • ·         চার ধরনের বল- মহাকর্ষ, নিউক্লিয়ার, বিদ্যুৎ চৌম্বকীয় বল এবং দুর্বল বলকে একসূত্রে গাথার চেষ্টাকে স্ট্রিং থিউরি বলে।


সবশেষে, সকল পাঠককে অনেকখানি আয়তনের একটুখানি বিজ্ঞানে ভ্রমনের আমন্ত্রণ জানাই!

বইয়ের নামঃ একটুখানি বিজ্ঞান
লেখকঃ মুহাম্মাদ জাফর ইকবাল
প্রকাশনিঃ কাকলী
প্রথম প্রকাশঃ ফেব্রুয়ারি, ২০০৭
পৃষ্ঠা সংখাঃ ১৭৫
মূল্যঃ ৩০০ টাকা



Comments

Popular posts from this blog

হুমায়ূন আহমেদের সবচেয়ে জনপ্রিয় ১০ গান

হুমায়ূন আহমেদ। ১৩ নভেম্বর ,  ১৯৪৮  –  ১৯ জুলাই ,  ২০১২ গদ্যকার, নাট্যকার , চলচ্চিত্রকার ইত্যাদি নানাবিধ পরিচয়ের বহুল প্রচার তাঁর গীতিকার পরিচয়কে ধামাচাপা দিয়ে রাখছে। হুমায়ূন আহমেদ সত্যিকার অর্থে সর্বদিকেই এক যাদুকরের নাম।  ১৩ নভেম্বর তাঁর জন্মদিন উপলক্ষ্যে আমরা জেনে  নেব  তাঁর লেখা সবচেয়ে জনপ্রিয় ১০  গানের লিরিক্স। সাথে থাকছে ইউটিউব লিংক!   ১। যদি মন কাঁদে,  তুমি চলে এসো  এক বরষায় এসো ঝর ঝর বৃষ্টিতে, জল ভরা দৃষ্টিতে যদি কোমল শ্যামল ছায়।। যদিও তখন আকাশ থাকবে বৈরী, কদম গুচ্ছ হাতে নিয়ে আমি তৈরী উতলা আকাশ মেঘে মেঘে হবে কালো ঝলকে ঝলকে নাচিবে বিজলি আলো।।  নামিবে আঁধার বেলা ফুরাবার ক্ষণে মেঘমল্লার বৃষ্টির মনে মনে কদমগুচ্ছ খোঁপায় জড়ায়ে দিয়ে জলভরা মাঠে নাচিবো তোমায় নিয়ে।।  ভিডিও লিংক-  https://youtu.be/VBS1yyHTxek?list=PLS1Hg7Qpin0RgzvTf6xai0ZDZcxAtENB6 ২। চাঁদনী পসরে কে আমারে স্মরণ করে কে আইসা দাড়াইসে গো আমার দুয়ারে। তাহারে চিনি না আমি...

জহির রায়হানের জীবন ও কর্মে বাঙালি জাতীয়তাবাদ

   ‘গুরুমশাই, অন্ধকারে কে দেখাবে মানচিত্রখানা? মাথার মধ্যে দৃশ্য নানা, স্মৃতির মধ্যে অজস্র ফুল, তাঁর সুবাসেই দেশকে পাচ্ছি বুকের কাছে’ নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী / দেশ দেখাচ্ছে অন্ধকারে স্মৃতিকে স্মরণে রেখে বুকের মধ্যে দেশকে অনুভব করা ও ক্ষণে ক্ষণে কথায়-কর্মে  তার প্রকাশ ঘটাতে পারা মানুষের সংখ্যা খুব কম- হাতে গোনা। জহির রায়হান সে রকম একজন। শুধু বাংলা চলচ্চিত্র নয় সাহিত্য, সাংবাদিকতা ও রাজনীতিতে তিনি দেখেছেন দেয়ালে পিঠ থেকে যাওয়া বাঙালির কাঙ্ক্ষিত  মুক্তির স্বপ্ন।  বাঙালির ঐতিহ্য-চিন্তা-মনন-দুর্দশা-লিপ্সা নিপুণ তুলিতে যেমন এঁকেছেন উপন্যাস ও গল্পের খেরোখাতায়, তেমনি বন্দী করে রেখেছেন তার চলমান ছবি সেলুলয়েডের ফিতায়।  বাঙালির স্বাধীনতার জন্য তিনি দেশান্তর হয়েছিলেন, হন্যে হয়ে বিশাল ভারতের বিশাল জনসমুদ্রে হেঁটে বেড়িয়েছেন, আন্তর্জাতিক সমাবেশে জনমত গড়ে তুলেছেন এবং ঘরে অসুস্থ স্ত্রী ও পরিবারকে অভুক্ত রেখে উপার্জিত অর্থ বিলেয়ে দিয়েছেন ভারতে বাংলাদেশের শরণার্থীদের জন্য।  বাংলা চলচ্চিত্রের নান্দনিক স্থপতি হিসেবে বাংলা সংস্কৃতিকে যেমন তিনি দিয়েছেন স...

কামরুল কাইসের ১০ কবিতা

১. মহামারি  স্থির সময় অথির বেগে দ্যাখায় যেন অসময়ের ফল। ২. মিতালি ওসব কথা থাক- একটু নিবিড় চঞ্চু তোমার নদীর যেন বাঁক। দৃশ্যে মাখো কালি‌ - তীরে বসে দেখছি নদী দিচ্ছি শিস আর তালি। দন্তসমেত হাঙর ছোটে করাল স্রোতে তোর আমি ডাকি শান্ত দোয়েল  তাতেই নষ্ট ভোর! আজকে এসব রাখ- অল্প কথার কথকতা দূর মিলিয়ে যাক। ৩. প্রাপ্তি মেঘের কান্না দেখব বলে আকাশে তাকিয়েছিলাম নেই, নেই কান্না শুধু এ মনেই। ঊষরতা পাবো বলে মরুভূমি চেয়েছিলাম নেই, নেই ফুল ফোটা সবখানেই। কাকে ছোঁব বলে যেন হাত বাড়িয়ে ছিলাম নেই, নেই রয়ে গেছে সে চির ভাবনাতেই। ৪. স্বাধীনতার সনেট ভেসে ছিল দেশ যবে শোণিত ধারায়, আর্তের ক্রন্দনে ছিল স্পর্শ বেদনার। পাখির সুরেলা কণ্ঠ বন্ধ ছিল হায়! হৃদয়-রক্ত ক্ষরণে বাংলা নিঃসাড়, রবির কিরণ নেই ঊষা-নীলিমায়, আকাশে ভাসল ধোঁয়া বারুদ বোমার পান্থ শ্রান্তি সারল না অশ্বত্থ ছায়ায়- অপরাহ্ণে নেমে এল নিকষ আঁধার! মাঠের সবুজতায় রক্তিম পরশ স্বাধীন প্রাণ স্পন্দন এলো অবশেষে- কণ্ঠে জাগাল সংগীত সপ্তসুর এসে! চেতনার রন্ধ্রে পূর্ণ গভীর হরষ উচ্ছসি হল উদ্ভাস। আজো বহমান। স্বাধীন-তটিনী-ধারা, হবে না প্রয়াণ। ৫. অপহৃত আকাশ যদি না কখনো গোধূ...