Skip to main content

সমাজবদল উন্নয়ন ও রাজনীতিঃ পাঠ অভিজ্ঞতা



বইয়ের শিরোনাম দেখে বইটিকে মনে হতে পারে Social Change বা সামাজিক পরিবর্তন নিয়ে তাত্ত্বিক বিষয়ের সাথে সাম্প্রতিক ইস্যুগুলোর ফাঁকফোকর অন্বেষণ ও কারণ-ফলাফল বিশ্লেষণ। বাংলাদেশের সমাজ পরিবর্তন দেশের আর্থ-সামাজিক, রাজনৈতিক, শিক্ষা, ধর্ম ও সংস্কৃতি প্রভৃতি ক্ষেত্রে প্রতিভাত হয়। সমাজের এ ক্ষেত্রসমূহে পরিবর্তন বা বদলের মূলে রয়েছে সুনির্দিষ্ট কতকগুলো উপাদান। উপাদানগুলো হলঃ প্রাকৃতিক উপাদান, জৈবিক উপাদান, সাংস্কৃতিক উপাদান, শিক্ষা, প্রযুক্তি, যোগাযোগ, শিল্পায়ন ও নগরায়ণ ইত্যাদি। তবে লেখক বলছেন, ‘বর্তমানে উত্তর আধুনিকতার দাপটে উন্নয়ন ও রাজনীতিকে সমাজবদলের অন্যতম মূল হাতিয়ার হিসাবে উপলব্ধি ও চিহ্নিত করেছি।’  

কিন্তু, বই পড়তে গিয়ে ধারণা পাল্টে গেল। এটি মূলত সমকালীন সামাজিক ও রাজনৈতিক সমস্যার উপর ভিত্তি করে পত্রিকায় প্রকাশিত উপ-সম্পাদকীয় বা কলামের সংকলন।  কলামগুলোকে পাঁচটি অধ্যায়ে বিন্যস্ত করা হয়েছে। এগুলো হল-
ক) সমাজ, উন্নয়ন রাজনীতি ও গণতন্ত্র
খ) অপরাধ, বিচার ব্যবস্থা, মানবাধিকার ও সামাজিক স্পন্দন
গ) ব্যক্তি, সমষ্টি ও সামাজিক সম্পর্ক
ঘ) বিশ্ববিদ্যালয়, উচ্চশিক্ষা, ভর্তি প্রক্রিয়া- পরীক্ষা ও জনপ্রত্যাশা
ঙ) নৈতিক শিক্ষা, সুশাসন ও ব্যক্তিস্বাধীনতা

আশা করেছিলাম, সমাজতাত্ত্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে সবগুলোর বিশ্লেষণ ও সমাধান থাকবে। কিন্তু বেশিরভাগ লেখাই খুব সাধারণ সমালোচনার ঢঙে লেখা। বিদেশী হত্যা, সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন, মানবাধিকার লঙ্ঘন, তারুণ্যের রাজনীতি ও কিশোর অপরাধ নিয়ে যেমন আলোচনা আছে, তেমনি আছে ডে কেয়ার সেন্টার, বৃদ্ধ নিবাস ও বিকল্প বিচারব্যবস্থার উপর তথ্যসমৃদ্ধ বর্ণনা।


আগ্রহী পাঠককে পড়ার আমন্ত্রণ! 

বইয়ের নাম- সমাজবদল: উন্নয়ন ও রাজনীতি
লেখক- তৌহিদুল হক
প্রকাশক- বাড কম্প্রিন্ট এন্ড পাবলিকেশন্স
প্রথম প্রকাশ- ২০১৬
পৃষ্ঠাসংখ্যা- ১৩৬
মূল্য- ২০০ টাকা

Comments

Popular posts from this blog

হুমায়ূন আহমেদের সবচেয়ে জনপ্রিয় ১০ গান

হুমায়ূন আহমেদ। ১৩ নভেম্বর ,  ১৯৪৮  –  ১৯ জুলাই ,  ২০১২ গদ্যকার, নাট্যকার , চলচ্চিত্রকার ইত্যাদি নানাবিধ পরিচয়ের বহুল প্রচার তাঁর গীতিকার পরিচয়কে ধামাচাপা দিয়ে রাখছে। হুমায়ূন আহমেদ সত্যিকার অর্থে সর্বদিকেই এক যাদুকরের নাম।  ১৩ নভেম্বর তাঁর জন্মদিন উপলক্ষ্যে আমরা জেনে  নেব  তাঁর লেখা সবচেয়ে জনপ্রিয় ১০  গানের লিরিক্স। সাথে থাকছে ইউটিউব লিংক!   ১। যদি মন কাঁদে,  তুমি চলে এসো  এক বরষায় এসো ঝর ঝর বৃষ্টিতে, জল ভরা দৃষ্টিতে যদি কোমল শ্যামল ছায়।। যদিও তখন আকাশ থাকবে বৈরী, কদম গুচ্ছ হাতে নিয়ে আমি তৈরী উতলা আকাশ মেঘে মেঘে হবে কালো ঝলকে ঝলকে নাচিবে বিজলি আলো।।  নামিবে আঁধার বেলা ফুরাবার ক্ষণে মেঘমল্লার বৃষ্টির মনে মনে কদমগুচ্ছ খোঁপায় জড়ায়ে দিয়ে জলভরা মাঠে নাচিবো তোমায় নিয়ে।।  ভিডিও লিংক-  https://youtu.be/VBS1yyHTxek?list=PLS1Hg7Qpin0RgzvTf6xai0ZDZcxAtENB6 ২। চাঁদনী পসরে কে আমারে স্মরণ করে কে আইসা দাড়াইসে গো আমার দুয়ারে। তাহারে চিনি না আমি...

জহির রায়হানের জীবন ও কর্মে বাঙালি জাতীয়তাবাদ

   ‘গুরুমশাই, অন্ধকারে কে দেখাবে মানচিত্রখানা? মাথার মধ্যে দৃশ্য নানা, স্মৃতির মধ্যে অজস্র ফুল, তাঁর সুবাসেই দেশকে পাচ্ছি বুকের কাছে’ নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী / দেশ দেখাচ্ছে অন্ধকারে স্মৃতিকে স্মরণে রেখে বুকের মধ্যে দেশকে অনুভব করা ও ক্ষণে ক্ষণে কথায়-কর্মে  তার প্রকাশ ঘটাতে পারা মানুষের সংখ্যা খুব কম- হাতে গোনা। জহির রায়হান সে রকম একজন। শুধু বাংলা চলচ্চিত্র নয় সাহিত্য, সাংবাদিকতা ও রাজনীতিতে তিনি দেখেছেন দেয়ালে পিঠ থেকে যাওয়া বাঙালির কাঙ্ক্ষিত  মুক্তির স্বপ্ন।  বাঙালির ঐতিহ্য-চিন্তা-মনন-দুর্দশা-লিপ্সা নিপুণ তুলিতে যেমন এঁকেছেন উপন্যাস ও গল্পের খেরোখাতায়, তেমনি বন্দী করে রেখেছেন তার চলমান ছবি সেলুলয়েডের ফিতায়।  বাঙালির স্বাধীনতার জন্য তিনি দেশান্তর হয়েছিলেন, হন্যে হয়ে বিশাল ভারতের বিশাল জনসমুদ্রে হেঁটে বেড়িয়েছেন, আন্তর্জাতিক সমাবেশে জনমত গড়ে তুলেছেন এবং ঘরে অসুস্থ স্ত্রী ও পরিবারকে অভুক্ত রেখে উপার্জিত অর্থ বিলেয়ে দিয়েছেন ভারতে বাংলাদেশের শরণার্থীদের জন্য।  বাংলা চলচ্চিত্রের নান্দনিক স্থপতি হিসেবে বাংলা সংস্কৃতিকে যেমন তিনি দিয়েছেন স...

কামরুল কাইসের ১০ কবিতা

১. মহামারি  স্থির সময় অথির বেগে দ্যাখায় যেন অসময়ের ফল। ২. মিতালি ওসব কথা থাক- একটু নিবিড় চঞ্চু তোমার নদীর যেন বাঁক। দৃশ্যে মাখো কালি‌ - তীরে বসে দেখছি নদী দিচ্ছি শিস আর তালি। দন্তসমেত হাঙর ছোটে করাল স্রোতে তোর আমি ডাকি শান্ত দোয়েল  তাতেই নষ্ট ভোর! আজকে এসব রাখ- অল্প কথার কথকতা দূর মিলিয়ে যাক। ৩. প্রাপ্তি মেঘের কান্না দেখব বলে আকাশে তাকিয়েছিলাম নেই, নেই কান্না শুধু এ মনেই। ঊষরতা পাবো বলে মরুভূমি চেয়েছিলাম নেই, নেই ফুল ফোটা সবখানেই। কাকে ছোঁব বলে যেন হাত বাড়িয়ে ছিলাম নেই, নেই রয়ে গেছে সে চির ভাবনাতেই। ৪. স্বাধীনতার সনেট ভেসে ছিল দেশ যবে শোণিত ধারায়, আর্তের ক্রন্দনে ছিল স্পর্শ বেদনার। পাখির সুরেলা কণ্ঠ বন্ধ ছিল হায়! হৃদয়-রক্ত ক্ষরণে বাংলা নিঃসাড়, রবির কিরণ নেই ঊষা-নীলিমায়, আকাশে ভাসল ধোঁয়া বারুদ বোমার পান্থ শ্রান্তি সারল না অশ্বত্থ ছায়ায়- অপরাহ্ণে নেমে এল নিকষ আঁধার! মাঠের সবুজতায় রক্তিম পরশ স্বাধীন প্রাণ স্পন্দন এলো অবশেষে- কণ্ঠে জাগাল সংগীত সপ্তসুর এসে! চেতনার রন্ধ্রে পূর্ণ গভীর হরষ উচ্ছসি হল উদ্ভাস। আজো বহমান। স্বাধীন-তটিনী-ধারা, হবে না প্রয়াণ। ৫. অপহৃত আকাশ যদি না কখনো গোধূ...