Skip to main content

সন্ধ্যারাতের শেফালির অন্ধকার ও আলোর গল্প


Image result for সন্ধ্যারাতের শেফালি
ক্যাবারে ড্যান্সার। অভিজাত হোটেলে ও নাইট ক্লাবের এক ধরনের নৃত্যশিল্পী। ১৯৪৭ সালের দেশ বিভাজনের ফলে পূর্ব বাংলার নারায়ণগঞ্জ থেকে পশ্চিম বাংলায় গমন করা এক কিশোরী মেয়ের মধ্যরাতের শীর্ষ নৃত্যশিল্পী হয়ে ওঠার এক চমৎকার বাস্তব গল্প। আরতি দাস থেকে মিস শেফালি দাস বনে যাওয়া, কলকাতার অভিজাত সম্প্রদায়ের সঙ্গে আলো আঁধারে মুখোমুখি হওয়ার গল্প শুনিয়েছেন প্রায় ২৩ বছর নৃত্যজগত দাপিয়ে বেড়ানো মিস শেফালি।
শেফালি তাঁর ব্যক্তিজীবনের সাথে প্রসঙ্গক্রমে সে কালের মঞ্চ ও চলচ্চিত্র জগতের নানান তারকার কথা বলেছেন, তাঁর সম্পর্কে অন্যদের ভাবনা কেমন ছিল, মহানায়ক উত্তমকুমারের সাথে ছিল কেমন ভ্রাতৃত্বপূর্ণ ও বন্ধুত্ব পূর্ণ সম্পর্ক। সে সাথে ধরা পড়েছে সময়ের সাথে তৎকালীন সমাজের সংস্কৃতি ও রুচি পরিবর্তনের নানান আঙ্গিক।
বইয়ের সবচেয়ে আকর্ষণ এর ঝরঝরে ভাষা, যদিও তা অনুলিখিত। প্রথম বাঙালি ক্যাবারে ড্যান্সার হিসেবে তার প্রতিষ্ঠা যেমন প্রশংসনীয়, তেমনি নক্ষত্রের মতন পতন, তাঁর পরিবারের অবহেলা ও বর্তমানে নিঃসঙ্গ ও অভাবী জীবন যাপন দুঃখজনক। আবু সাইয়িদের ‘নিরন্তর’এর পতিতা বোনের মতো এরা অন্যের জন্য, পরিবারের জন্য বিলিয়ে দেয় নিজের সব কিছু। অথচ নিজেরা পড়ে রয় আস্তাকুঁড়ে।
পাঠক এ বইয়ে পাবেন, বেশির ভাগ মানুষের কাছে অপরিচিত এক জগতের সুখ, দুঃখ, জীবনধারা এবং সেই অতীতে ঘুরে আসার এক সুবর্ণ সুযোগ।
বইয়ের নাম- সন্ধ্যারাতের শেফালি
লেখক- মিস শেফালি
প্রকাশ- আনন্দ পাবলিশার্স(২০১৪)

Comments

Popular posts from this blog

হুমায়ূন আহমেদের সবচেয়ে জনপ্রিয় ১০ গান

হুমায়ূন আহমেদ। ১৩ নভেম্বর ,  ১৯৪৮  –  ১৯ জুলাই ,  ২০১২ গদ্যকার, নাট্যকার , চলচ্চিত্রকার ইত্যাদি নানাবিধ পরিচয়ের বহুল প্রচার তাঁর গীতিকার পরিচয়কে ধামাচাপা দিয়ে রাখছে। হুমায়ূন আহমেদ সত্যিকার অর্থে সর্বদিকেই এক যাদুকরের নাম।  ১৩ নভেম্বর তাঁর জন্মদিন উপলক্ষ্যে আমরা জেনে  নেব  তাঁর লেখা সবচেয়ে জনপ্রিয় ১০  গানের লিরিক্স। সাথে থাকছে ইউটিউব লিংক!   ১। যদি মন কাঁদে,  তুমি চলে এসো  এক বরষায় এসো ঝর ঝর বৃষ্টিতে, জল ভরা দৃষ্টিতে যদি কোমল শ্যামল ছায়।। যদিও তখন আকাশ থাকবে বৈরী, কদম গুচ্ছ হাতে নিয়ে আমি তৈরী উতলা আকাশ মেঘে মেঘে হবে কালো ঝলকে ঝলকে নাচিবে বিজলি আলো।।  নামিবে আঁধার বেলা ফুরাবার ক্ষণে মেঘমল্লার বৃষ্টির মনে মনে কদমগুচ্ছ খোঁপায় জড়ায়ে দিয়ে জলভরা মাঠে নাচিবো তোমায় নিয়ে।।  ভিডিও লিংক-  https://youtu.be/VBS1yyHTxek?list=PLS1Hg7Qpin0RgzvTf6xai0ZDZcxAtENB6 ২। চাঁদনী পসরে কে আমারে স্মরণ করে কে আইসা দাড়াইসে গো আমার দুয়ারে। তাহারে চিনি না আমি...

জহির রায়হানের জীবন ও কর্মে বাঙালি জাতীয়তাবাদ

   ‘গুরুমশাই, অন্ধকারে কে দেখাবে মানচিত্রখানা? মাথার মধ্যে দৃশ্য নানা, স্মৃতির মধ্যে অজস্র ফুল, তাঁর সুবাসেই দেশকে পাচ্ছি বুকের কাছে’ নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী / দেশ দেখাচ্ছে অন্ধকারে স্মৃতিকে স্মরণে রেখে বুকের মধ্যে দেশকে অনুভব করা ও ক্ষণে ক্ষণে কথায়-কর্মে  তার প্রকাশ ঘটাতে পারা মানুষের সংখ্যা খুব কম- হাতে গোনা। জহির রায়হান সে রকম একজন। শুধু বাংলা চলচ্চিত্র নয় সাহিত্য, সাংবাদিকতা ও রাজনীতিতে তিনি দেখেছেন দেয়ালে পিঠ থেকে যাওয়া বাঙালির কাঙ্ক্ষিত  মুক্তির স্বপ্ন।  বাঙালির ঐতিহ্য-চিন্তা-মনন-দুর্দশা-লিপ্সা নিপুণ তুলিতে যেমন এঁকেছেন উপন্যাস ও গল্পের খেরোখাতায়, তেমনি বন্দী করে রেখেছেন তার চলমান ছবি সেলুলয়েডের ফিতায়।  বাঙালির স্বাধীনতার জন্য তিনি দেশান্তর হয়েছিলেন, হন্যে হয়ে বিশাল ভারতের বিশাল জনসমুদ্রে হেঁটে বেড়িয়েছেন, আন্তর্জাতিক সমাবেশে জনমত গড়ে তুলেছেন এবং ঘরে অসুস্থ স্ত্রী ও পরিবারকে অভুক্ত রেখে উপার্জিত অর্থ বিলেয়ে দিয়েছেন ভারতে বাংলাদেশের শরণার্থীদের জন্য।  বাংলা চলচ্চিত্রের নান্দনিক স্থপতি হিসেবে বাংলা সংস্কৃতিকে যেমন তিনি দিয়েছেন স...

কামরুল কাইসের ১০ কবিতা

১. মহামারি  স্থির সময় অথির বেগে দ্যাখায় যেন অসময়ের ফল। ২. মিতালি ওসব কথা থাক- একটু নিবিড় চঞ্চু তোমার নদীর যেন বাঁক। দৃশ্যে মাখো কালি‌ - তীরে বসে দেখছি নদী দিচ্ছি শিস আর তালি। দন্তসমেত হাঙর ছোটে করাল স্রোতে তোর আমি ডাকি শান্ত দোয়েল  তাতেই নষ্ট ভোর! আজকে এসব রাখ- অল্প কথার কথকতা দূর মিলিয়ে যাক। ৩. প্রাপ্তি মেঘের কান্না দেখব বলে আকাশে তাকিয়েছিলাম নেই, নেই কান্না শুধু এ মনেই। ঊষরতা পাবো বলে মরুভূমি চেয়েছিলাম নেই, নেই ফুল ফোটা সবখানেই। কাকে ছোঁব বলে যেন হাত বাড়িয়ে ছিলাম নেই, নেই রয়ে গেছে সে চির ভাবনাতেই। ৪. স্বাধীনতার সনেট ভেসে ছিল দেশ যবে শোণিত ধারায়, আর্তের ক্রন্দনে ছিল স্পর্শ বেদনার। পাখির সুরেলা কণ্ঠ বন্ধ ছিল হায়! হৃদয়-রক্ত ক্ষরণে বাংলা নিঃসাড়, রবির কিরণ নেই ঊষা-নীলিমায়, আকাশে ভাসল ধোঁয়া বারুদ বোমার পান্থ শ্রান্তি সারল না অশ্বত্থ ছায়ায়- অপরাহ্ণে নেমে এল নিকষ আঁধার! মাঠের সবুজতায় রক্তিম পরশ স্বাধীন প্রাণ স্পন্দন এলো অবশেষে- কণ্ঠে জাগাল সংগীত সপ্তসুর এসে! চেতনার রন্ধ্রে পূর্ণ গভীর হরষ উচ্ছসি হল উদ্ভাস। আজো বহমান। স্বাধীন-তটিনী-ধারা, হবে না প্রয়াণ। ৫. অপহৃত আকাশ যদি না কখনো গোধূ...