সভ্যতা মানেই বিশেষ অঞ্চলের ক্রমোন্নয়নের এক ধাপে নগর সংস্কৃতির বিপুল বিকাশ এবং অবকাঠামোতে এ উন্মেষের প্রতিচ্ছবি তৈরি হওয়া। আজ থেকে প্রায় সাত হাজার আগে উত্তর আফ্রিকার নীলনদের তীরে গড়ে ওঠেছিল এমনি এক সমৃদ্ধ জনপদ- যার নাম মিশরীয় সভ্যতা।
প্রত্মতত্ব গবেষক ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এ কে এম শাহনাওয়াজ ‘প্রাচীন সভ্যতা সিরিজ-১- মিশর’ বইয়ে সে প্রাচীন সভ্যতায় এক চক্কর ঘুরিয়ে নিয়ে আসার প্রচেষ্টা চালিয়েছেন এবং এক্ষেত্রে লেখক শতভাগ সফল। আর্ট পেপারে ছাপা, চাররঙ্গা পৃষ্ঠায় এবং মনোহর ও সাবলীল গদ্যে লেখক বর্ণনা করেছেন প্রাচীন এ সভ্যতার উন্মেষ, বিকাশ ও ধ্বংসের পুঙ্খানুপুঙ্খ অথচ সংক্ষিপ্ত ইতিহাস।
এ বই পাঠে পাঠক জানতে পারবেন সভ্যতা ও মিশর সভ্যতার বিকাশধারা, সভ্যতার কৃষি-নির্ভরতা, অহিংস অথচ শক্তিশালী ফারাওদের শাসনব্যবস্থা, হায়ারোগ্লিফিক, রহস্যময় রজেটা পাথর কিংবা প্যাপিরাস থেকে কাগজের আবিষ্কারের পটভূমি আর মমি ও পিরামিড নির্মাণের নান্দনিক এক আলেখ্য। বইয়ের আকর্ষণ বৃদ্ধি করেছে পাতায় পাতায় দুর্লভ ও লাগসই ছবিগুলো।
তবে, প্রতিটি অধ্যায়ের বিস্তার আরও বাড়তে পারত। জ্ঞানের তৃষ্ণা এতে যেমন অধিক নিবারিত হতো, তেমনি জ্ঞানতৃষ্ণা বাড়ত অন্য প্রাচীন সভ্যতাকে ঘিরে।
সামাজিক ইতিহাসের অনন্য গ্রন্থ ‘হাজার বছরের বাঙালি সংস্কৃতি’র ভুমিকায় গোলাম মুরশিদ তাঁর বই সম্পর্কে লিখেছিলেন, ‘বিজ্ঞ পণ্ডিতেরা পড়িতে চান, পড়িবেন, কিন্তু তাহাদিগের নিমিত্তে…… লিখিত হয় নাই।’
এ বই তেমনি জ্ঞানের ভারে নুব্জ কোন গবেষণা গ্রন্থ নয়, বরং সাত হাজার বছর আগের নীল নদের তীরে এক সমৃদ্ধ সভ্যতা এক চক্কর ঘুরে আসার জন্য সর্বশ্রেণীর পাঠকের সুগম ও দৃষ্টিনন্দন সড়ক।
বইয়ের নাম- প্রাচীন সভ্যতা – মিশর
লেখক- এ কে এম শাহনাওয়াজ
প্রকাশ- প্রথমা (২০০৯)
Comments
Post a Comment