Skip to main content

কামরুল কাইসের ৫টি কবিতা

 


মন্থন


যে গেছে সে যাক;
আমার দুঃখ সবসময়ের
দেব না তার ভাগ।

২৫.০৫.২০২০

ছায়া

পারি নি তো, পারবও না
যদি ছেড়েই দিলুম
এখন কেন যাচ্ছ না?

৩০.০৫.২০১৭

আকালের ইতিহাস

মাতাল ফাল্গুনে ঝরে যাওয়া খয়েরি মেহগনি পাতা
বিক্ষত ব্রঙ্কিওলের ঘনীভূত স্পর্শ নিয়ে বললো,
কবি! তোমার দরজায়ও কি মৃত্যুর ডাকপিয়ন
রোজ রোজ এসে টোকা দেয়?
আমি বললাম, না,
ভুল দিঠির প্রবেশপথেই তার সাবলীল বিচরণ,
অনাহুত রোদনে সে শোনে আকাঙ্ক্ষার
প্রতিধ্বনি
অথচ সে জানে না ,
তার বাঁ হাতের বাদামি খামের চিঠিটার জন্য
বন্দী গুহার জলীয়বাষ্প ক্রমাগত ঋণী হয়ে
পড়ছে
আমার আজন্ম অশ্রুপাতের কাছে,
সহস্র সুখ পুড়ে পুড়ে যে লন্ঠনে পথ চলেছি
সেও এখন উপত্যকা- গভীর শূন্যতার
ভ্রুকুটির নৈঋত নিঃশ্বাসে সুকঠিন বৃত্তে
অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রামে লিপ্ত ।
সে জানতেও চেষ্টা করে নি,
কোন মানবী আমার দেহের সমস্ত হাড়-গোড়
নাড়ার আগুনে খড়-কুটোর মত পুড়িয়ে
তার ভস্মে দিওয়ালী খেলেছিল।
অসংখ্য নির্ঘুম দিনরাত্রি জানে,
একটি মৃত্যুর জন্য কি ব্যাকুল প্রতীক্ষা আমার!
ইচ্ছাকৃত অনিচ্ছা বড্ড যন্ত্রণাদায়ক।

২/০৩/২০১৫

মোহভঙ্গ

বহমান ব্রত দ্যাখ
কত নীতি জলে তোর
মুছে নেছে রুঢ় ঢেউ,
আঁধিয়ারে কই ভোর?
ভুলে গেছি সব, সব
বৈষ্ণব, শৈশব।

২১.১০.২০১৭

অপেক্ষায় নেই

'আনন্দ, কোথায় গেলি? এইখানে আয়-
ভালো কইরা দ্যাখ তো- কে আইছে?
ব, এইখানে বইসা সিগারেট ধরা-
সেলফি তুলবি?
আয় এইখানে বোস।'
হাতে হেমলক নয়, চা'র কাপ চাপা তার ঠোঁটে-
কান্দিরপাড়ে সক্রেতিস এবং আমাকে
পাশাপাশি বসতে দেখে
অনেকের চোখে জমে বিস্ময়-বারুদ।
সময় পোড়ায় স্টার, বাষ্পাশ্রিত চায়ের লিকার
স্তনবতী যুবতীরা চড়ে যায় রিকশায় রিকশায়
যার যার নাক চোখ নিজস্ব মুখমণ্ডলে-
একদা অভিন্ন বলে হেঁটে গেছি শহরের এপাশ
ওপাশ -
পেয়ে যাবো দেখা তার-
সাতিশয় সান্দ্র স্বরে শুনবো কুশল
সে আশায় হায়-
হেঁটে আসি বয়ঃসন্ধি; শহরের ক্লান্ত সীমা ।
ঘনিষ্ঠ দুঃখেরা খুব কম ফিরে আসে
তবু
নিখোঁজ সংবাদের পোস্টারের মতো লেপ্টে
থাকি
ধুলোর দেয়ালে
কেউ যদি ফিরে আসে, আনন্দ কোথায় যাবে?

২৪/১০/২০১৬

Comments

  1. ধন্যবাদ দিয়ে ছোট করবো না, গর্বিত এলাকাবাসী, মুগ্ধকর কবিতা ছিলো, এভাবেই এগিয়ে যাবেন ইনশাআল্লাহ।

    ReplyDelete

Post a Comment

Popular posts from this blog

হুমায়ূন আহমেদের সবচেয়ে জনপ্রিয় ১০ গান

হুমায়ূন আহমেদ। ১৩ নভেম্বর ,  ১৯৪৮  –  ১৯ জুলাই ,  ২০১২ গদ্যকার, নাট্যকার , চলচ্চিত্রকার ইত্যাদি নানাবিধ পরিচয়ের বহুল প্রচার তাঁর গীতিকার পরিচয়কে ধামাচাপা দিয়ে রাখছে। হুমায়ূন আহমেদ সত্যিকার অর্থে সর্বদিকেই এক যাদুকরের নাম।  ১৩ নভেম্বর তাঁর জন্মদিন উপলক্ষ্যে আমরা জেনে  নেব  তাঁর লেখা সবচেয়ে জনপ্রিয় ১০  গানের লিরিক্স। সাথে থাকছে ইউটিউব লিংক!   ১। যদি মন কাঁদে,  তুমি চলে এসো  এক বরষায় এসো ঝর ঝর বৃষ্টিতে, জল ভরা দৃষ্টিতে যদি কোমল শ্যামল ছায়।। যদিও তখন আকাশ থাকবে বৈরী, কদম গুচ্ছ হাতে নিয়ে আমি তৈরী উতলা আকাশ মেঘে মেঘে হবে কালো ঝলকে ঝলকে নাচিবে বিজলি আলো।।  নামিবে আঁধার বেলা ফুরাবার ক্ষণে মেঘমল্লার বৃষ্টির মনে মনে কদমগুচ্ছ খোঁপায় জড়ায়ে দিয়ে জলভরা মাঠে নাচিবো তোমায় নিয়ে।।  ভিডিও লিংক-  https://youtu.be/VBS1yyHTxek?list=PLS1Hg7Qpin0RgzvTf6xai0ZDZcxAtENB6 ২। চাঁদনী পসরে কে আমারে স্মরণ করে কে আইসা দাড়াইসে গো আমার দুয়ারে। তাহারে চিনি না আমি...

জহির রায়হানের জীবন ও কর্মে বাঙালি জাতীয়তাবাদ

   ‘গুরুমশাই, অন্ধকারে কে দেখাবে মানচিত্রখানা? মাথার মধ্যে দৃশ্য নানা, স্মৃতির মধ্যে অজস্র ফুল, তাঁর সুবাসেই দেশকে পাচ্ছি বুকের কাছে’ নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী / দেশ দেখাচ্ছে অন্ধকারে স্মৃতিকে স্মরণে রেখে বুকের মধ্যে দেশকে অনুভব করা ও ক্ষণে ক্ষণে কথায়-কর্মে  তার প্রকাশ ঘটাতে পারা মানুষের সংখ্যা খুব কম- হাতে গোনা। জহির রায়হান সে রকম একজন। শুধু বাংলা চলচ্চিত্র নয় সাহিত্য, সাংবাদিকতা ও রাজনীতিতে তিনি দেখেছেন দেয়ালে পিঠ থেকে যাওয়া বাঙালির কাঙ্ক্ষিত  মুক্তির স্বপ্ন।  বাঙালির ঐতিহ্য-চিন্তা-মনন-দুর্দশা-লিপ্সা নিপুণ তুলিতে যেমন এঁকেছেন উপন্যাস ও গল্পের খেরোখাতায়, তেমনি বন্দী করে রেখেছেন তার চলমান ছবি সেলুলয়েডের ফিতায়।  বাঙালির স্বাধীনতার জন্য তিনি দেশান্তর হয়েছিলেন, হন্যে হয়ে বিশাল ভারতের বিশাল জনসমুদ্রে হেঁটে বেড়িয়েছেন, আন্তর্জাতিক সমাবেশে জনমত গড়ে তুলেছেন এবং ঘরে অসুস্থ স্ত্রী ও পরিবারকে অভুক্ত রেখে উপার্জিত অর্থ বিলেয়ে দিয়েছেন ভারতে বাংলাদেশের শরণার্থীদের জন্য।  বাংলা চলচ্চিত্রের নান্দনিক স্থপতি হিসেবে বাংলা সংস্কৃতিকে যেমন তিনি দিয়েছেন স...

কামরুল কাইসের ১০ কবিতা

১. মহামারি  স্থির সময় অথির বেগে দ্যাখায় যেন অসময়ের ফল। ২. মিতালি ওসব কথা থাক- একটু নিবিড় চঞ্চু তোমার নদীর যেন বাঁক। দৃশ্যে মাখো কালি‌ - তীরে বসে দেখছি নদী দিচ্ছি শিস আর তালি। দন্তসমেত হাঙর ছোটে করাল স্রোতে তোর আমি ডাকি শান্ত দোয়েল  তাতেই নষ্ট ভোর! আজকে এসব রাখ- অল্প কথার কথকতা দূর মিলিয়ে যাক। ৩. প্রাপ্তি মেঘের কান্না দেখব বলে আকাশে তাকিয়েছিলাম নেই, নেই কান্না শুধু এ মনেই। ঊষরতা পাবো বলে মরুভূমি চেয়েছিলাম নেই, নেই ফুল ফোটা সবখানেই। কাকে ছোঁব বলে যেন হাত বাড়িয়ে ছিলাম নেই, নেই রয়ে গেছে সে চির ভাবনাতেই। ৪. স্বাধীনতার সনেট ভেসে ছিল দেশ যবে শোণিত ধারায়, আর্তের ক্রন্দনে ছিল স্পর্শ বেদনার। পাখির সুরেলা কণ্ঠ বন্ধ ছিল হায়! হৃদয়-রক্ত ক্ষরণে বাংলা নিঃসাড়, রবির কিরণ নেই ঊষা-নীলিমায়, আকাশে ভাসল ধোঁয়া বারুদ বোমার পান্থ শ্রান্তি সারল না অশ্বত্থ ছায়ায়- অপরাহ্ণে নেমে এল নিকষ আঁধার! মাঠের সবুজতায় রক্তিম পরশ স্বাধীন প্রাণ স্পন্দন এলো অবশেষে- কণ্ঠে জাগাল সংগীত সপ্তসুর এসে! চেতনার রন্ধ্রে পূর্ণ গভীর হরষ উচ্ছসি হল উদ্ভাস। আজো বহমান। স্বাধীন-তটিনী-ধারা, হবে না প্রয়াণ। ৫. অপহৃত আকাশ যদি না কখনো গোধূ...