Skip to main content

Posts

Showing posts from May, 2021

কামরুল কাইসের ১০ কবিতা

১. মহামারি  স্থির সময় অথির বেগে দ্যাখায় যেন অসময়ের ফল। ২. মিতালি ওসব কথা থাক- একটু নিবিড় চঞ্চু তোমার নদীর যেন বাঁক। দৃশ্যে মাখো কালি‌ - তীরে বসে দেখছি নদী দিচ্ছি শিস আর তালি। দন্তসমেত হাঙর ছোটে করাল স্রোতে তোর আমি ডাকি শান্ত দোয়েল  তাতেই নষ্ট ভোর! আজকে এসব রাখ- অল্প কথার কথকতা দূর মিলিয়ে যাক। ৩. প্রাপ্তি মেঘের কান্না দেখব বলে আকাশে তাকিয়েছিলাম নেই, নেই কান্না শুধু এ মনেই। ঊষরতা পাবো বলে মরুভূমি চেয়েছিলাম নেই, নেই ফুল ফোটা সবখানেই। কাকে ছোঁব বলে যেন হাত বাড়িয়ে ছিলাম নেই, নেই রয়ে গেছে সে চির ভাবনাতেই। ৪. স্বাধীনতার সনেট ভেসে ছিল দেশ যবে শোণিত ধারায়, আর্তের ক্রন্দনে ছিল স্পর্শ বেদনার। পাখির সুরেলা কণ্ঠ বন্ধ ছিল হায়! হৃদয়-রক্ত ক্ষরণে বাংলা নিঃসাড়, রবির কিরণ নেই ঊষা-নীলিমায়, আকাশে ভাসল ধোঁয়া বারুদ বোমার পান্থ শ্রান্তি সারল না অশ্বত্থ ছায়ায়- অপরাহ্ণে নেমে এল নিকষ আঁধার! মাঠের সবুজতায় রক্তিম পরশ স্বাধীন প্রাণ স্পন্দন এলো অবশেষে- কণ্ঠে জাগাল সংগীত সপ্তসুর এসে! চেতনার রন্ধ্রে পূর্ণ গভীর হরষ উচ্ছসি হল উদ্ভাস। আজো বহমান। স্বাধীন-তটিনী-ধারা, হবে না প্রয়াণ। ৫. অপহৃত আকাশ যদি না কখনো গোধূ...

প্রিয় ২০টি সিনেমা

প্রথমেই বলে রাখি, যে কোন কিছু সেরা বা প্রিয় হওয়া ব্যক্তি নিরপেক্ষ।  সময়ের সঙ্গে তার বদল ঘটতেও পারে। তবু  এ মুহূর্তে আমার দেখা অসংখ্য সিনেমার মধ্যে কিছু সিনেমা অনেকের ভাল লাগবে বলেই আমার বিশ্বাস।   সেই ১৮৯৫ সালে প্রথম বাণিজ্যিক সিনেমার পরে বিশ্বজুড়ে এ পর্যন্ত কম হলেও ২৫ লক্ষ সিনেমা তৈরি হয়েছে! খুব স্বাভাবিকভাবে একজন মানুষ সারা জীবনে এর সিকিভাগ সিনেমাও দেখে শেষ করতে পারবে না। বই ও সংগীতের পরে আমার কাছে বিনোদন ও শিক্ষার সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম মনে হয় সিনেমাকে। বেছে বেছে সিনেমা দেখলেও সব ছবি হৃদয় ও মগজে একসাথে দাগ কাটে না। কিছু ছবির গল্প অনুপ্রেরণার মাধ্যমে স্বপ্নকে তাড়িয়ে তোলে। কিছু ছবির সিনেমাটোগ্রাফি এত দৃষ্টিনন্দন যে চোখের রেটিনায় লেপ্টে থাকে দীর্ঘদিন। কখনো সংলাপ, কখনো অভিনয় কিংবা সব মিলিয়ে একটি ছবি হয়ে ওঠে অনন্য ও দর্শকপ্রিয়। করোনাকালের এই অবসরে বসে বসে আমার দেখা সেরা ২০ টি সিনেমার একটি তালিকা তৈরি ফেললাম। ১। ফরেস্ট গাম্প (১৯৯১) ফরেস্ট গাম্প এক বোকা লোকের সহজ সরলভাবে বেঁচে থাকার গল্প। ফরেস্ট গাম্প কীভাবে ঘটনাক্রমে তার জীবনকে আমেরিকার ইতিহাসের কয়েকটি গুরুত্বপূর্...

কামরুল কাইসের ৫টি কবিতা

  মন্থন যে গেছে সে যাক; আমার দুঃখ সবসময়ের দেব না তার ভাগ। ২৫.০৫.২০২০ ছায়া পারি নি তো, পারবও না যদি ছেড়েই দিলুম এখন কেন যাচ্ছ না? ৩০.০৫.২০১৭ আকালের ইতিহাস মাতাল ফাল্গুনে ঝরে যাওয়া খয়েরি মেহগনি পাতা বিক্ষত ব্রঙ্কিওলের ঘনীভূত স্পর্শ নিয়ে বললো, কবি! তোমার দরজায়ও কি মৃত্যুর ডাকপিয়ন রোজ রোজ এসে টোকা দেয়? আমি বললাম, না, ভুল দিঠির প্রবেশপথেই তার সাবলীল বিচরণ, অনাহুত রোদনে সে শোনে আকাঙ্ক্ষার প্রতিধ্বনি অথচ সে জানে না , তার বাঁ হাতের বাদামি খামের চিঠিটার জন্য বন্দী গুহার জলীয়বাষ্প ক্রমাগত ঋণী হয়ে পড়ছে আমার আজন্ম অশ্রুপাতের কাছে, সহস্র সুখ পুড়ে পুড়ে যে লন্ঠনে পথ চলেছি সেও এখন উপত্যকা- গভীর শূন্যতার ভ্রুকুটির নৈঋত নিঃশ্বাসে সুকঠিন বৃত্তে অস্তিত্ব রক্ষার সংগ্রামে লিপ্ত । সে জানতেও চেষ্টা করে নি, কোন মানবী আমার দেহের সমস্ত হাড়-গোড় নাড়ার আগুনে খড়-কুটোর মত পুড়িয়ে তার ভস্মে দিওয়ালী খেলেছিল। অসংখ্য নির্ঘুম দিনরাত্রি জানে, একটি মৃত্যুর জন্য কি ব্যাকুল প্রতীক্ষা আমার! ইচ্ছাকৃত অনিচ্ছা বড্ড যন্ত্রণাদায়ক। ২/০৩/২০১৫ মোহভঙ্গ বহমান ব্রত দ্যাখ কত নীতি জলে তোর মুছে নেছে রুঢ় ঢেউ, আঁধিয়ারে কই ভোর? ভুলে গেছি সব...

আশি দিনে বিশ্ব চক্কর দেওয়ার রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা

  'আশি দিনে বিশ্ব ভ্রমণ' বাজি ধরে আশি দিনে বিশ্ব চক্কর দেওয়ার রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতার বয়ান। ফিলিয়াস ফগ এ বইয়ের মূল চরিত্র যে কিনা রিফর্ম ক্লাবের সদস্য হিসেবে বাজিতে জুয়া খেলে। ঘটনাস্থল লন্ডনে একবার ব্যাংক ডাকাতির ঘটনা ঘটে। ঘটনাক্রমে ঠিক সেই সময়েই ফগ তার বন্ধুর সাথে বাজি ধরে আশি দিনে বিশ্ব ভ্রমণের সিদ্ধান্ত নেয়। যেই কথা সেই কাজ। ফগ তার ব্যক্তিগত সহকারী জ্যাঁ পাসোপার্তুকে সাথে নিয়ে বিশ্বভ্রমণে বের হল। পদে পদে তার বাধা বিঘ্ন। দৃঢ়চিত্ত ফগ সেসব উৎরে যাবার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী। এরই মধ্যে লন্ডনজুড়ে গুজব রটে, ফগ ব্যাংক ডাকাতি করে ডলার নিয়ে বিশ্বভ্রমণের ছুতোয় গা ঢাকা দিয়েছে। অনেক দেশে পুলিশ ও গোয়েন্দা হয়রানি এবং অন্যান্য সঙ্কট মোকাবেলা করে অবশেষে তারা পৌঁছে যায় যথাসময়ে যথাস্থানে। এই ফগ চরিত্রের মানসিক স্থিরতা ও সাহস বইয়ের প্রেক্ষাপটকাল ঊনবিংশ শতকের শেষ দিক অনুযায়ী যথেষ্ট প্রাগ্রসর। যদিও বর্তমানে প্রযুক্তির উৎকর্ষের বদৌলতে আরও কম সময়ে বিশ্বভ্রমণ সম্ভব। শামসুদ্দীন নওয়াবের সুখপাঠ্য অনুবাদ পাঠককে মূলবইমুখী করবে না বলেই আমার বিশ্বাস। আশি দিনে বিশ্ব ভ্রমণ ঃ জুল ভার্ন অনুবাদঃ শামসুদ্দীন নওয়াব ...

স্বৈরতান্ত্রিক সময়

  আমার ইচ্ছে হয় না প্রায় মধ্যরাতে লোকাল বাসের শেষ ট্রিপে ঝুলে ঝুলে অন্ধকারে ধুলিভরা কুয়াশায় ভিজতে ভিজতে অভুক্ত জ্বর কাতর শরীরটাকে নিয়ে টলতে টলতে ক্যাম্পাসে ফিরি, আমার ইচ্ছে হয় না ক্যান্টিনওয়ালার ডেগচির কাছানো বরফের মত ঠাণ্ডা ভাত আর পাতার মত নেতিয়ে পড়া মামলেট দিয়ে ক্ষুধা নিবৃত্তির অপচেষ্টায় অর্ধেক প্লেট বমিতে ভরে ফেলি আর দু গ্লাস জলের সুবাদে কোন রকম নিঃশ্বাস নিয়ে কাটিয়ে দেই নির্ঘুম রাত আমার ইচ্ছে হয় না কমলাপুর রেলওয়ে ব্রিজের উপর সাজিয়ে রাখা সুদৃশ্য স্ট্রবেরী খাওয়ার আকাঙ্ক্ষাকে ময়লা কাগজের মত ছুঁড়ে মেরে ডাস্টবিনে ফেলে দেই আমার ইচ্ছে হয় না স্বাদ নিয়ে বড্ড খুঁতখুঁতে আমার জিহ্বায় লাগাই টিউশনের পিঁপড়া- ভাসা চিনিহীন খয়েরি তরল। নিম্নাংশ ক্ষয়ে যাওয়া রংচটা জিন্সের ক্ষুব্ধ কয়েকটি সুতো যখন বলে ওঠে, আজ লিংকন – মার্ক্স বেঁচে থাকলে তাদের শ্মশ্রু ছিঁড়ে বাচ্চাদের উপহার দিতাম যাতে তার বিনিময়ে বাচ্চারা কিছুক্ষণ কটকটি চিবোতে পারে, তাদের সঞ্চয়ী পাঁজির উপযুক্ত স্থান বারবিকিওর অভিজাত চুলো তখন আমার কণ্ঠেও লক্ষ লক্ষ প্রলেতারিয়েত ক্ষোভ অসংখ্য অপঘাত, বঞ্চনার সমাকলনে নিঃশঙ্ক ধ্বনিতে উচ্চারিত হলো, রাষ্ট্...

কুমিল্লা বিমানবন্দরঃ প্রত্নতত্ত্ব না সমূহ সম্ভাবনা?

  সবধরনের সুযোগ সুবিধা থাকা সত্ত্বেও গত দুই যুগ ধরে বন্ধ রয়েছে কুমিল্লা বিমানবন্দর ৷ অথচ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় চালু হওয়া বন্দরটি ব্যবহার হয়েছে বহুবছর ৷ কুমিল্লা নগরীর প্রাণকেন্দ্র কান্দিরপাড় থেকে অল্প দূরত্বে ইপিজেডের পাশেই ৭৭ একর ভূমির ওপর প্রতিষ্ঠিত কুমিল্লা বিমানবন্দর। দীর্ঘ ৪০ বছর উড়োজাহাজ ওঠা নামা না করলেও এটি কুমিল্লা বিমানবন্দর নামেই এ অঞ্চলের মানুষের হৃদয়ে স্থান নিয়ে আছে। আবার আক্ষেপও বাসা বেঁধে আছে কেন এটি পুনরায় চালু হচ্ছে না। অথচ প্রয়োজনীয় লোকবল, নেভিগেশন ফ্যাসিলিটিস, কন্ট্রোল টাওয়ার, ভিএইচএফ সেট, এয়ার কমিউনিকেশন যন্ত্রপাতি, ফায়ার স্টেশন, ফায়ার সার্ভিস, যাত্রীকক্ষ, যানবাহনসহ সব সুযোগ রয়েছে। কেবল পুনরায় চালুর উদ্যোগ নেই। কুমিল্লা বিমানবন্দরে কবে ওড়বে উড়োজাহাজ- এমন প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে কুমিল্লাবাসীর মনে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৬ সালে রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (ইপিজেড) উদ্বোধনের সময় ঘোষণা দিয়েছিলেন কুমিল্লার এ বিমানবন্দরেই শর্টটেক অব ল্যান্ডিং বা স্টল বিমান সার্ভিস চালু করা হবে। কিন্তু ২৫ বছরেও সেই ঘোষণা বাস্তবায়িত হয়নি। তবে বৃহত্তর কুমিল্লার মানুষ এখনো আশায় ...